মিঠাপুকুরে রতিয়া গ্রামে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ফুল সংগ্রহ করতে যাওয়া চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় ২৩ দিনেও অভিযুক্ত সার্ভেয়ার রুহুল আমীনকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
অভিযোগ উঠেছে, অভিযুক্তর ছেলে পররাষ্ট্র ক্যাডার রাকিবুল ইসলাম ও ভাতিজা আইনজীবি মিজানুর রহমানের প্রভাব খাটিয়ে নির্যাতনের শিকার পরিবারটিকে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এরফলে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে ধর্ষণের শিকার ওই পরিবারটি।
ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, ঘটনা পর হতে ধর্ষকের পরিবার মামলা না করতে নানা ভাবে বাধা দিয়েছে। এখন মামলা করার ফলে আমাদের মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। আমরা অসহায়, তারা প্রভাবশালী। আমরা সঠিক বিচার পাবকি?
উল্লেখ্য, ২১ ফেব্রুয়ারি দিন শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে রথিয়া গ্রামের সার্ভেয়ার রুহুল আমীনের বাড়িতে ফুল তুলতে যায় ভুক্তভোগী শিশুটি। শিশুটি যখন তাদের বাড়ির ফুলবাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করছিল তখন তাকে জোর করে ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন। শিশুটিকে বাসায় আসার পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। খবর পেয়ে মিঠাপুকুর থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে মিঠাপুকুর থানায় এবং দুপুরে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নিয়ে যায়।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবার অসহায় ও দরিদ্র। তারা অভিযুক্ত ধর্ষক রুহুল আমিনের বড় ভাইয়ের বাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। প্রভাবশারী হওয়ায় তারা ঘটনটি ভিন্নখাতে প্রবাহের চেস্টা করেছে। এখন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে শুনতেছি।
ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে মিঠাপুকুর ও রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ধর্ষককে দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ভূমিহীন সংগঠন, জাতীয় নাগরিক কমিটি, নিজেরা করি, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ও বিভিন্ন স্কুল-কলেজের সাধারন শিক্ষার্থীরা। প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। তারপরও ঘটনার ২৩ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত ধর্ষক রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অভিযুক্ত ধর্ষকের ভাতিজা মিজানুর রহমান বলেন, আমরা মামলা করতেও বাধা দেইনি। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়ার প্রশ্ন ওঠেনা।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর ছিদ্দিক জানান, আইনগত সব প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। অভিযুক্ত ধর্ষককে গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।