রংপুর জেলায় দুষ্প্রাপ্য ও দুর্লভ মাধবীলতা ফুল ফুটেছে। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, রংপুর অঞ্চলের কোথাও এ ফুলের দেখা মেলেনি বিগত ৩০ বছরে। দেশে বর্তমানে হাতেগোনা মাত্র কয়েকটি স্থানে মাধবীলতা গাছ রয়েছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে মাধবীলতা গাছে ফুলের দেখা মেলে রংপুর নগরীর সেনপাড়ার বাসিন্দা কবি, লেখক ও ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার রানা মাসুদের বাড়ির বাগানে। তিনি বেশ কিছু দুর্লভ প্রজাতির গাছগাছালি দিয়ে বাগান করেছেন। বৃক্ষপ্রেমী অনেকেই তার সংগ্রহ দেখতে ভিড় করছেন।
কবি রানা মাসুদ বলেন, “ছোট ছোট কিছু প্রাপ্তির আনন্দ অনেক বড়। এই যেমন আজ বাড়িতে এ ফুলের প্রথম আগমনে যে আনন্দ তা বুঝিয়ে বলা সম্ভব নয়। এটাই আসল মাধবীলতা ফুল। আমার জানা মতে, রংপুরের একমাত্র মাধবীলতা গাছ এবং তাতে ফুল ধরেছে তা-ও আবার আমাদের বাড়িতে। মাধবীলতা ফুল দেখতে ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং রমনা পার্কে গিয়েছিলাম। আজ নিজের আঙিনায় দেখছি।”
মাধবীলতা দেখতে আসা বৃক্ষপ্রেমী সাহানুর রহমান বলেন,“অনেক দিন থেকে স্বপ্ন দেখি মাধবীলতা দেখতে ঢাকার বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাব। এরই মধ্য আজ সকালে কবি রানা মাসুদের ফোনে তার বাড়িতে এসে বিরল এ ফুলটি দেখে মুগ্ধ হলাম।”
মাধবীলতা গাছের ফুল সম্পর্কে জানা গেছে, ফুল সাদা রঙের, পাঁচটি পাপড়ি এবং তার মধ্যে পঞ্চম পাপড়ির গোড়ার দিক হলদেটে। ফুল দেখতে তিল ফুলের মতো এবং খুব সুগন্ধযুক্ত। বসন্ত ও গ্রীষ্ম এ ফুলের ঋতু হলেও কখনো কখনো বর্ষা পর্যন্ত ফোটে। ফুল থেকে ফল হয়। এ লতা গাছটি এখন দুষ্প্রাপ্য।
মাধবীলতা গাছ বৃক্ষারোহী লতা এবং দীর্ঘজীবী। ডাল ছোট ছোট এবং ঝোপঝাড় হয়ে যায়। বহুবর্ষী হলে ধীরে ধীরে মূল লতাটি বেশ মোটা হয়। ডাল দু-তিন বছর পরপর কেটে দিতে হয়। এর লতা যতই বাড়তে থাকে ততই নতুন নতুন ডালপালা গজায় এবং বেশি করে ফুল ফোটে। এর মোটা ডালের ছাল মেটে রঙের, ভেতরের কাঠ লালচে ও শক্ত। পাতা বিপরীতমুখী, আয়তাকার, বোঁটার দিক থেকে আগা ক্রমে সরু। সাধারণত ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি লম্বা হয়। অনেকটা চাঁপা ফুলের পাতার মতো। বাগানের শোভার জন্য যত্ন করে মাধবীলতা গাছ লাগানো হয়। তবে দুষ্প্রাপ্য মাধবীতলা অযত্ন-অবহেলায় বীজ থেকে চারা হয়ে বেড়ে উঠতে পারে।