শিরোনাম
শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে বিতর্ক, বিএনপি কর্মী গুলিবিদ্ধ ট্রেনে ঈদ যাত্রা : ২৫ মার্চের টিকিট মিলছে আজ আজ ২ কোটি ২৬ লাখ শিশু খাবে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল দেবীগঞ্জে মসজিদ ও কবরস্থানের জমি দখলের পাঁয়তারার অভিযোগে এলাকাবাসীর মানববন্ধন  আগামী এক দশকের মধ্যে পঞ্চগড়ের একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন : সারজিস যৌথ অভিযানে সাত দিনে ৩৮৩ অপরাধী গ্রেপ্তার রংপুরে মামলা থেকে নাম সরাতে ব্যবসায়ী মারফত ঘুষ দাবি পুলিশ কর্মকর্তার, বাদীকে থানাতেই মারধর জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে নিজ দেশে ফেরার আকুতি রোহিঙ্গাদের তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টি নিয়ে নতুন বার্তা আবহাওয়া অফিসের বাংলাদেশের সংস্কারে পাশে থাকার আশ্বাস গুতেরেসের
শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন

ওষুধ শিল্পে অস্থিরতা; সংকটের আশঙ্কা

ডেস্ক নিউজ / ৬৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে দেশের ওষুধ শিল্পে শুরু হয় শ্রমিক অসন্তোষ। এতে অচলাবস্থা তৈরি হয় ওষুধ শিল্প খাতে। শ্রমিক আন্দোলনের প্রভাবে এরই মধ্যে স্কয়ার, জেনারেল, ইনসেপ্টার দুটি কারখানাসহ ১৯টি কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। দুই সপ্তাহের এ আন্দোলনে ফুরিয়ে আসছে ওষুধের মজুত। এভাবে চলতে থাকলে শিগগির দেশে ওষুধের সংকট দেখা দেবে বলে জানিয়েছেন ওষুধ শিল্প সমিতির নেতারা। এ খাতে অস্থিরতা কাটাতে সরকারের হস্তক্ষেপ চান তারা।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির মহাসচিব এস এম শফিউজজামান বলেন, অন্যায্য দাবিতে শ্রমিকরা ওষুধ শিল্প মালিকদের জিম্মি করছে। উৎপাদন বন্ধ থাকায় দ্রুতই ওষুধের সংকট দেখা দেবে। সাধারণত আমরা এক মাসের ওষুধ মজুত রাখি। দুই সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি বন্ধ। মজুত থেকে সরবরাহ করায় মজুতও ফুরিয়ে আসছে। তিনি বলেন, বেতন বৃদ্ধির দাবি নিয়ে এলে একদিন দাবি মানলে আরেকদিন আবারও আসছে। মালিকদের জিম্মি করে রাখছে। দেশের চাহিদার প্রায় ৯৮ ভাগ ওষুধের জোগান দিচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান। এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারকে এখনই ভূমিকা নিতে হবে, নয়তো দেশে ওষুধের ভয়াবহ সংকট তৈরি হবে।

জানা গেছে, গাজীপুরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ও এপেক্স ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরি স্থায়ীকরণ, কারখানার কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগ, শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত না করা, দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটিসহ ২১ দফা দাবিতে গত ৩১ আগস্ট আন্দোলনে নামেন শ্রমিকরা। আন্দোলনের প্রভাবে স্কয়ারের একটি কারখানা এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের দাবি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসে ১০ বছর কাজ করেও চাকরি স্থায়ী হয়নি। খাবারের ক্ষেত্রেও তাদের কর্মস্থলে বৈষম্য রয়েছে। এ সময় তারা কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিও জানান। এদিকে, চাকরি স্থায়ীকরণ, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ একই দাবিতে হরিণহাটিতে আন্দোলনে নামেন এপেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শ্রমিকরা। এরপর ১৭ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শরিফ ফার্মাসিউটিক্যালের শ্রমিকরা।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরিফ ফার্মাসিউটিক্যালস কারখানার অ্যাডমিন ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন শ্রমিকদের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ ও নির্যাতন চালিয়ে আসছেন। বারবার মালিকপক্ষকে বলার পরও তাকে অপসারণ করা হয়নি। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ১৭ দফা দাবি জানিয়ে আসছিলেন শ্রমিকরা। দাবি না মানায় আন্দোলনের ডাক দেন তারা।

এর আগে গত মঙ্গলবার শিল্পের সংকট তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলন করে ওষুধ শিল্প সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, গত ৫০ বছরে দু-একটি ঘটনা ছাড়া ওষুধ শিল্প খাতে কাজ করা শ্রমিকদের চাহিদা নিয়ে অসন্তোষ ছিল না। তাদের খাওয়া-দাওয়া, বেতন-ভাতাদিসহ সবকিছুর ব্যাপারে মালিকরা সচেতন। কিন্তু দুই সপ্তাহ ধরে হঠাৎ করেই বিভিন্ন দাবি-দাওয়া জানাচ্ছেন, যা পূরণ করা আমাদের জন্য প্রায় অসম্ভব। কারণ, বিগত চার বছরে ডলারের উচ্চমূল্যের কারণে কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে মাঝারি ধরনের কোম্পানিগুলো বন্ধ হওয়ার পথে। বড় যে ২৫ থেকে ৩০টি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি রয়েছে, তাদের লাভের পরিমাণও একেবারে সীমিত। স্টাফদের বন্দি করে রেখে তারা কাগজে স্বাক্ষর নিতে চাচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত একটি কোম্পানির স্টাফদের বন্দি করে রাখা হয়। ইনসেপ্টায়ও প্রায় ৪০০ স্টাফকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। ওষুধ বিজ্ঞানী ও ঊর্ধ্বতনদের হেনস্তা করা হচ্ছে।

তারা বলেন, আমরা ভাবতে পারছি না কর্মীরা এমন আন্দোলন করতে পারে। অনেক কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে, অনেকে সমন্বয় করতে পারছে না। সহিংসতা হোক, এটা আমরা চাই না। ওষুধ শিল্প সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুরো দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং তা অপূরণীয়।

বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি এবং ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, শ্রমিকদের একটা দাবি পূরণ করলে নতুন করে আরও দাবি তোলা হচ্ছে। একটার পর একটা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কোনোভাবেই আমরা এটাকে থামাতে পারছি না। এ কারণে আমাদের সন্দেহ হয়, এতদিন কোনো দাবি না জানালেও হঠাৎ করে কেন এমন? আবার পূরণ করলেও কেন মানছে না, এটা আমাদের বোধগম্য নয়। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়কে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনটি আগে করবেন, সেটি নিয়ে ভাবছেন। আমরা চাই ওনারা এখনই এগিয়ে আসুন। তিনি বলেন, এভাবে চললে মজুত থাকা ওষুধ দিয়ে কিছুদিন হয়তো চলবে, কিন্তু এরপরই সংকট তৈরি হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ