শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:২২ অপরাহ্ন

আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সাবেক প্রক্টরকে হামলাকারী ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ইব্রাহিম / ৪২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় প্রধান আসামিদের গ্রেফতার না করা এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক শরীফুল ইসলামকে শিক্ষার্থীদের উপর সরাসরি হামলাকারী ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এই ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভে শত শত সাধারণ শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তব্য দেন বেরোবি শিক্ষার্থী জাকের হোসেন পাশা, সাকিব, খোকন, আশিক ও সুলতানা।শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আবু সাইদ হত্যা মামলায় তার বড় ভাই রমজান আলীর করা মামলায় সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামের নামও নেই। মামলায় প্রধান প্রধান আসামি যারা তাদের কাউকেই এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আবু সাঈদ জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থানের আইকন তার- পুলিশের সামনে দুই হাত প্রসারিত করে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার কারণে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। আন্দোলনের সময় যেসব পুলিশ কর্মকর্তা আবু সাঈদ হত্যার মাস্টারমাইন্ড তাদের কাউকেই এখনও গ্রেফতার করা হয়নি। আন্দোলনের সময় বেরোবির ছাত্রলীগের ক্যাডাররা আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মশিউর, আসাদ এরা সরাসরি হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আবু সাঈদের উপর হামলা চালিয়েছে- এদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। এতে মনে হচ্ছে, পুরো ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আবু সাইদ হত্যাকাণ্ডের সময় সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামের দায় থাকতে পারে- সেটা প্রশাসনিক। তাই বলে তাকে প্রধান আসামি বানানোর পাঁয়তারা কোনোভাবেই বেরোবির শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। জুলাই আগস্ট আন্দোলনে প্রক্টর শরীফুল ইসলামের সরাসরি শিক্ষার্থীদের পক্ষে অংশ নেওয়া, মিছিলে যোগ দেওয়া, আবু সাঈদ নিহতের পর গায়েবানা জানাজায় অংশ নেওয়া- সবই ছিল আন্দোলনের পক্ষে। আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় তাকে কোনোভাবে জড়িত হতে আমরা দেখিনি। ফলে তাকে প্রধান আসামি বানানোর পাঁয়তারা গভীর চক্রান্তের অংশ বলে তারা মনে করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, আবু সাইদের হত্যাকাণ্ড ছিল পরিকল্পিত। অথচ ওই ঘটনার ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আওয়ামী রেজিমকে সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রশাসনিক ব্যর্থতার বলে হত্যাকাণ্ডের দায় থেকে খুনিদের বাঁচানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামকে প্রধান আসামি বানানো তারই একটি নীলনকশা। আমরা চাই, আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত মাস্টারমাইন্ড পুলিশের কর্মকর্তা, ছাত্রলীগের ক্যাডার আর দুই শিক্ষক তাদের বিচার করে সাজা নিশ্চিত করতে হবে। সে জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও আইন উপদেষ্টাসহ সবার প্রতি আমাদের দাবি, প্রকৃত অপরাধী চিহ্নিত করা ও আবু সাঈদ হত্যায় যার যা দায় তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।

তারা বলেন, অথচ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলামকে প্রধান আসামি বানানোর পাঁয়তারা কোনোভাবেই মেনে নেবে না শিক্ষার্থীরা। আবু সাঈদ হত্যার সময় ভিডিওগুলোতে তার জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ নেই। শিক্ষার্থীরা প্রকৃত আসামীদের গ্রেফতার এবং আবু সাইদ হত্যা মামলা দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামি হিসেবে সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগ বেরোবির নেতা আকাশ, পুলিশ কনস্টেবল সুজন চন্দ্র, এএসআই আমীর আলীকে আগামী ৯ এপ্রিল গ্রেফতার করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ